আমাদের হৃদয় ক্ষরণের কান্নার উচ্ছাস প্রকাশিত হয় অন্তরের আকুল কামনায়। অন্তরের আকুতিতেই আমরা আধ্যাত্মিক চেতনার জগতে প্রবেশ করি। এ কান্না নাম-যশ এর জন্য নয়। এ কান্না আমাদের জীবন তরীর চালক, ঈশ্বরের সাথে নিঃশর্তভাবে একাত্ম হওয়ার আকুতি।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচরনের সংগে ঈশ্বরকে জীবন্তবাস্তবতা ভাবা এবং তাঁর অস্তিত্বকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। আমরা যদি প্রত্যহ খাবার না খাই, আমরা আমাদের শরীরকে ক্ষুধার্ত রাখি। একইভাবে, আমাদের ভাবতে হবে যে, যদি আমরা প্রত্যহ প্রার্থনা ও ধ্যান না করি, আমরা আধ্যাত্মিক শরীরকে অভুক্ত রাখছি। আমরা যখন বাষ্পরুদ্ধ হৃদয়ে আকুলভাবে ঈশ্বরকে চাই, আমরা দেখবো ঈশ্বর আমাদের মাঝে নেমে আসছেন উপর থেকে নীচে; এ যেন দুজন মানুষ মিলিত হচ্ছেন। একজন একতলায় অন্যজন তিনতলায়। আমরা দোতলায় উঠি এবং ভগবান দোতলায় নেমে আসেন, সেখানে আমরা সাক্ষাৎ এবং পরষ্পরকে পরিতৃপ্ত করি।
যেমন তৃতীয় তলা থেকে কেউ নীচতলায় নেমে আসে; আমরা প্রথম তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় উঠি আর ঈশ্বর তৃতীয় তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নেমে আসেন এবং সেখানে আমরা সাক্ষাৎ করি এবং পরষ্পর পরিতৃপ্ত হই।
দ্বিতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ি তৈরী হয় আমাদের হৃদয়ের কান্নায়; এ কান্না আকুলভাবে ঈশ্বরকে পাওয়ার কান্না; অন্যায় আচরনের পর অনুতাপমূলক অশ্রুপাত এ নয়। হৃদয় আকুল আকাংখার সাথে কাঁদছে উর্ধমূখী জ্বলন্ত শিখার মতো। যে কান্নার মাত্রা বাড়ছেই এবং সর্বদা উপরমূখী। ঈশ্বর তাঁর নিজ দয়ায় নীচে নেমে আসেন ঠিক ঝরনাধারার মতো। যখন আমাদের আন্তরিক আকুলতা এবং ঐশ্বরিক করুণা একত্রে মিশে যায় আমরা ঈশ্বরের সাথে সংযুক্ত হয়ে আধ্যাত্মিকভাবে পরিপূর্ণতার অভিজ্ঞতা লাভ করি।
- শ্রী চিন্ময়, পরমানন্দের পথে